ইন্টারনেট ভিত্তিক অর্থ লেনদেন গেটওয়ে পেপ্যাল নিয়ে বাংলাদেশীদের হতাশার দিন শেষ হতে চলেছে। আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর (বছরের তৃতীয় প্রান্তিক) মাসের মধ্যে বাংলাদেশে পেপ্যাল তাদের কার্যক্রম শুরু করবে বলে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিস বা বেসিস নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছেন পেপ্যাল সংশ্লিষ্ঠরা। আজ শনিবার বেসিস সভাপতি মাহবুব জামান প্রিয় টেক-কে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পেপ্যাল-এর অভাবে দেশের ফ্রিল্যান্সার এবং আইসিটি খাতের ব্যবসায়ীদের প্রচুর সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এটি সমাধানে আমরা বেসিসের পক্ষ থেকে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছি প্রথম থেকেই। সম্প্রতি ঢাকায় ই-এশিয়া সম্মেলনে আমরা যে ফ্রিল্যান্সিং সম্মেলন করেছিলাম সেখানেও সাধারণ ফ্রিল্যান্সাররা দেশে পেপ্যাল চালুর জোর দাবী জানান। সম্মেলনে উপস্থিত ইন্টেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট জন ডেভিস বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নেন, আমরাও তাঁকে বোঝাই বাংলাদেশে পেপ্যাল-এর প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে। ডেভিস যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গিয়ে পেপ্যাল-এর প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশে পেপ্যাল চালুর কথা বলেন। তাঁর কথায়ই আমাদের দেশে কার্যক্রম শুরুর আগ্রহ দেখিয়েছেন পেপ্যাল। এবছরের তৃতীয় প্রান্তিকেই বাংলাদেশে পেপ্যাল তাদের কার্যক্রম শুরু করবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। এখানে কার্যক্রম শুরু করতে পেপ্যাল-এর কোন আইনগত ঝামেলা নেই। বাংলাদেশে আসলে নিজেদের ব্যবসায়িক ক্ষতি হবে এমন আশংকা থেকেই এতদিন সেবাটি চালুতে অনাগ্রহ দেখিয়েছিলো প্রতিষ্ঠানটি। তাছাড়া বিদেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ইমেজের জন্যও টাকা লেনদেনের এই কোম্পানীটি আগ্রহ প্রকাশ করেনি। মাহবুব জামান মনে করেন, যারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তির বিরুদ্ধে প্রচারনা চালিয়েছে, তারা দেশের সাংঘাতিক রকমের একটি ক্ষতি সাধন করেছে।
তথ্যপ্রযুক্তিক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ঠরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক এই পেমেন্ট গেটওয়ে বাংলাদেশে বৈধতা পেলে আরো বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে দেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা এলেও তা রেমিট্যান্স হিসেবে গণ্য হচ্ছে না। অবৈধ উপায়ে এগুলো দেশে প্রবেশ করছে। আমাদের দেশের তরুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এতো কষ্ট করে যে বৈদেশিক অর্থ উপার্জন করছেন, সেটা কেবলমাত্র সিস্টেমের কারণে "কালো টাকা"য় পরিনত হয়ে যাচ্ছে, যা উপার্জনকারীর জন্য মোটেও সুখকর বিষয় নয়। এই ব্যবস্থার ফলে, আমাদের তরুন প্রজন্ম সেই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে।
ref: tech.priyo